শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

ইসলাম ডেস্ক :

প্রকাশিত: ১৩:০৯, ২৭ মার্চ ২০২৪

ইতিকাফের গুরুত্ব ও ফজিলত

ইতিকাফের গুরুত্ব ও ফজিলত
ইতিকাফ

ইতিকাফ আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো অবস্থান করা, আবদ্ধ করা বা আবদ্ধ রাখা। যিনি ইতিকাফ করেন তাকে মুতাকিফ বলে। ইসলামের পরিভাষায় ইতিকাফ হলো, ইবাদতের উদ্দেশ্যে ইতিকাফের নিয়তে নিজেকে নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবদ্ধ রাখা।

এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, যখন আমি কাবা গৃহকে মানুষের জন্য সম্মিলনস্থল ও শান্তির আলয় করলাম, আর তোমরা মাকামে ইবরাহিমকে নামাজের জায়গা বানাও এবং আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখো। আর যতক্ষণ তোমরা ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান করো, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সঙ্গে মিশো না। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেওয়া সীমানা। অতএব, এর কাছেও যেয়ো না। এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ মানুষের জন্য, যাতে তারা তাকওয়া লাভ করতে পারে। (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১২৫)।

হজরত আয়িশা সিদ্দীকা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী করিম (সা.) আজীবন রমজানের শেষ দশকগুলো ইতিকাফ করেছেন। তার ওফাতের পরও তাঁর বিবিরা ইতিকাফ করতেন। (বুখারি ও মুসলিম; আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৪৬, পৃষ্ঠা: ১২৯)।

রমজানের শেষ ১০ দশকের ইতিকাফ সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কিফায়া অর্থাৎ মসজিদের মহল্লার কেউ না কেউ মসজিদে ইতিকাফ করতে হবে। যদি কোনো মুসল্লি ইতিকাফ না করেন তাহলে সবাই গুনাহগার হবেন। আর যদি কোনো একজন ইতিকাফ করেন তাহলে সব মুসল্লিরা এর গুনাহ হতে বেঁচে যাবেন। চাঁদের হিসাবে ২১ তারিখ রাত থেকে ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা পর্যন্ত এই ইতিকাফের সময়। কারণ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রত্যেক বছর এই দিনগুলোতেই ইতেকাফ করতেন।

এ সম্পর্কে হজরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. বর্ণনা করেন, ‘নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন। ওফাত পর্যন্ত তিনি এভাবেই (ইতিকাফ) করে গেছেন।’ (অর্থাৎ মৃত্যু পর্যন্ত ইতিকাফের এই ধারা অব্যাহত ছিল) (বুখারি ও মুসলিম) হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাযি. বর্ণনা করেন, ‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন।’ হজরত নাফে বলেন, ‘আমাকে হজরত ইবনে ওমর রাযি. ওই স্থানটি দেখিয়েছেন যে স্থানে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতিকাফ করতেন।’ (মুসলিম শরিফ)

ইতিকাফের ফজিলত :

হজরত ইবনে আব্বাস রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘ইতিকাফকারী গোনাহ থেকে মুক্ত থাকে। তাঁর সব নেক আমল এমনভাবে লিপিবদ্ধ করতে থাকে, যেভাবে তিনি নিজে করতেন।’ (ইবনে মাজাহ, মিশকাত) অর্থাৎ ইতিকাফের বাহিরে থাকতে ইতিকাফকারী যেসব ভালো কাজ আনজাম দিতেন, যা তিনি ইতিকাফ থাকার কারণে করতে পারছেন না, সেসব আমল আগের মতোই লিপিবদ্ধ হতে থাকে।

শবেকদরকে খোঁজা ও এই পবিত্র রাতের ঘোষিত ফজিলত থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য ইতিকাফ থেকে উত্তম আর কিছুই হতে পারে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

জনপ্রিয়