রমজানের বিদায়লগ্নে যেসব দোয়া বেশি পড়বেন
বিদায় হতে চলেছে পবিত্র মাহে রমজান মাস। বরকতময় ও মহিমান্বিত এই মাসে মুসলমানদের কিছু করণীয় রয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল হলো- বেশি বেশি দোয়া করা। বিশেষ করে আমল কবুলের দোয়া। এছাড়াও তাকওয়া, ক্ষমা ও আল্লাহর রহমত লাভের জন্যও দোয়া করা যায়। কেননা রমজান মাসই হলো- তাকওয়া অর্জন, ক্ষমা ও আল্লাহর রহমত লাভের মাস।
রমজানের বিদায়মুহূর্তে আমল কবুলের দোয়া রমজানে করা আমলগুলো কবুলের জন্য পবিত্র কোরআনের এই দোয়াটি করা যায়— رَبَّنَا تَقَبَّلۡ مِنَّا ؕ اِنَّکَ اَنۡتَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ উচ্চারণ: ‘রব্বানা তাকাব্বাল মিন্না ইন্নাকা আংতাস সামিউল আলিম।’ অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পক্ষ থেকে (আমল) গ্রহণ করুন, নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞাতা।’ (সুরা বাকারা: ১২৭)
আরেকটি দোয়া হলো- اللهم سلِّمني إلى رمضان وسلِّم لي رمضان وتسلَّمه مني متقبلًا উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লিমনি ইলা রামাদান, ওয়া সাল্লিম লী রামাদান, ওয়া তাসাল্লামহু মিন্নি মুতাকাব্বালান।’ অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে (আগামী) রমজান পর্যন্ত সুস্থ রাখুন। রমজানকে আমার জন্য নিরাপদ করুন। রমজানকে (রমজানের ইবাদতগুলো) আমার পক্ষ থেকে কবুল করুন। হজরত ইয়াহইয়া ইবনে কাসির (রহ.) রমজানের শেষরাতে এই দোয়াটি করতেন।
আমল কবুল ও ক্ষমাপ্রার্থনার আরেকটি দোয়া হলো- رَبَّنَا وَاجۡعَلۡنَا مُسۡلِمَيۡنِ لَـكَ وَمِنۡ ذُرِّيَّتِنَآ اُمَّةً مُّسۡلِمَةً لَّكَ وَاَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبۡ عَلَيۡنَا ۚ اِنَّكَ اَنۡتَ التَّوَّابُ الرَّحِيۡمُ উচ্চারণ: ‘রব্বানা ওয়াজআলনা মুসলিমাইনি লাকা ওয়ামিন জুররিয়্যাতিনা উম্মাতান মুসলিমাতাল্লাকা ওয়াআরিনা মানাসিকানা ওয়াতুব আলাইনা ইন্নাকা আন্তাত তাওয়াবুর রাহীম।’ অর্থ: ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধরের মধ্য থেকে আপনার অনুগত জাতি বানান। আর আমাদেরকে আমাদের ইবাদতের বিধি-বিধান দেখিয়ে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা বাকারা: ১২৮)
আল্লাহর ক্ষমা ও রহমত লাভের একটি দোয়া হলো- رَّبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ উচ্চারণ: ‘রব্বিগফির ওয়ার হাম ওয়া আনতা খইরুর র-হিমীন।’ অর্থ: ‘হে আমার রব! ক্ষমা করুন ও দয়া করুন, আর আপনিই তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। (সুরা মুমিনুন: ১১৮)
তাকওয়া লাভের দোয়া- اَللَّهُمَّ اِنِّى أَسْألُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আস-আলুকাল হুদা ওয়াত-তুকা ওয়াল আ'ফাফা ওয়াল গিনা।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে হেদায়েত, তাকওয়া, সুস্থতা ও সম্পদ প্রার্থনা করছি (সুনানে তিরমিজি: ৩৪৮৯)
উল্লেখিত দোয়াগুলো রমজানের শেষমুহূর্তে বেশি বেশি করা উচিত। তাওবা-ইস্তেগফারের সঙ্গে আল্লাহর প্রতি সুধারণা রেখে দোয়াগুলো করবেন। আল্লাহ ফিরিয়ে দেবেন না। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ (সুরা মুমিন : ৬০)
ইমাম তাবারি (রহ.) বলেন, ‘যে বান্দা তাঁর আনুগত্যের প্রতি আগ্রহী হয়, আল্লাহ তাকে দান করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর তাওফিক পেয়ে তাঁকে সন্তুষ্ট করতে চায়, আল্লাহ তাকে তাওফিক দেন। আল্লাহ বান্দার প্রতি দয়ালু। সুতরাং তিনি তাওবা করলে তাকে শাস্তি দেন না, কেউ তাওবা ও ফিরে আসার ইচ্ছা করলে তাকে অপদস্থ করেন না এবং তার তাওবা প্রত্যাখ্যান করেন না।’ (তাফসিরে তাবারি: ৪/১৬৯)
আ/ম