রোববার ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রকাশিত: ১২:০৮, ২০ এপ্রিল ২০২৫

নাহিদ ইসলাম

একই ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হতে পারবে না

একই ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হতে পারবে না
সংগৃহীত

একই ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হতে পারবে না, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এমন প্রস্তাব করেছে বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, যিনি একবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তিনি পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি হতে পারবেন না।

 

শনিবার (১৯ এপ্রিল) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

 

নাহিদ বলেন, আলোচনায় আমরা ক্ষমতার ভারসাম্য, আমাদের যে সংবিধানে এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক একটি কাঠামো প্রধানমন্ত্রীর কাছে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত সেটার কীভাবে গণতন্ত্রায়ন করা যায়, রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে গিয়ে এবং এক ব্যক্তির প্রভাবে বা প্রধান নির্বাহীর বাইরে গিয়ে সাংবিধানিক যে নিয়োগ রয়েছে প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য যে নিয়োগগুলো রয়েছে সেই নিয়োগগুলো কীভাবে আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি এবং শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে আমরা কোন ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম তৈরি করতে পারি, এছাড়া নারীর ক্ষমতায়ন এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা মোটাদাগে এই মৌলিক বিষয়ের উপরে আমাদের আলোচনা ছিল। 

 

তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী শাসিত সরকার নয়, বরং মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার সেটার প্রস্তাবনা দিয়েছি। 

 

সংখ্যানুপাতিক হারে উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচনের পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচনের আগেই উচ্চকক্ষের প্রার্থীর ঘোষণা দেওয়ার পক্ষে মত এনসিপির। একইসঙ্গে ১০০ নারী আসনের সরাসরি ভোটের পক্ষে দলটি। তবে নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে আরও আলোচনার পক্ষে তারা। 

 

নাহিদ ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইলেক্টোরাল কলেজের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে। নিম্নকক্ষ উচ্চকক্ষ জেলা সমন্বয় কাউন্সিল স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এদের মাধ্যমে একটা ইলেক্টোরাল কলেজ করে সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের কথা বলা হয়েছে।

বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে আলাদা সচিবালয় করা, বিচার বিভাগের জন্য আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়া এবং বিভাগীয় বেঞ্চ তৈরি করা, জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে বিচারপতি প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা এবং সেক্ষেত্রে উচ্চপক্ষের মতামত নেওয়া যায় কিনা সে বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন নাহিদ ইসলাম।

সংবিধানের মূলনীতির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা দেখেছি যে বিভিন্ন সময়ে সংবিধানে দলীয় মূলনীতির মাধ্যমে আসলে নিজেদের দলীয় রাজনৈতিক অবস্থানকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে আমরা সংবিধানে মূলনীতির প্রয়োজন আছে কিনা সে প্রশ্ন রেখেছি যে, এই মূলনীতির কাঠামোর বাইরে আমরা অন্য কোনো কাঠামো ভাবতে পারি কিনা। এবং আমাদের সংবিধানে গণপ্রজাতন্ত্রী এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কথা বলা থাকে মৌলিক অধিকারগুলোর কথাও বলা থাকে। সেক্ষেত্রে আলাদা করে মূলনীতির প্রয়োজন আছে কিনা। তবে আমরা মূলনীতির ক্ষেত্রে বলেছি যে, আমাদের যে ৭২-এর মূলনীতি এছাড়া পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সংশোধনের মাধ্যমে যে দলীয় মূলনীতিগুলো প্রবেশ করানো হয়েছে সেই মূলনীতিগুলো বাতিল করতে হবে, সে মূলনীতিগুলো আসতে পারবে না।

তিনি বলেন, সংবিধানে প্রত্যেক জাতিসত্তার স্বীকৃতি এবং প্রত্যেক জাতি ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর এবং এছাড়া বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর যেই স্বীকৃতি এবং অন্তর্ভুক্তি সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

 

শান্তিপূর্ণ ক্ষমতার হস্তান্তরের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের সবচাইতে বড় সংকট হচ্ছে যখন নির্বাচনের সময়কাল আসে তখন কীভাবে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হতে পারে সেটা নিয়ে নানা ধরনের মতপার্থক্য তৈরি হয়। যারা ক্ষমতাসীন দলগুলো থাকেন তারা কীভাবে আবার ক্ষমতায় আসতে পারেন সে ধরনের মেকানিজমের মধ্যে তারা ঢুকতে চান।

 

এ বিষয়ে দলের প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা কীভাবে হবেন, অন্য উপদেষ্টা কীভাবে হবেন সে নিয়ে আমাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। আমরাও কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছি যারা এনসিসির (জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল) মেম্বাররা যারা আছেন তাদের মধ্য থেকে প্রধানমন্ত্রী বা বিরোধীদলীয় যিনি নেতা আছেন এবং রাষ্ট্রপতি; তারা ব্যতিরেকে অন্যরা যারা আছেন তাদেরকে কীভাবে নিয়ে আসা যায় বা অন্য ব্যক্তিদের কীভাবে এখানে ইনক্লুড করা যায় সে ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমরা বিস্তারিত কথা বলেছি।  আমরা এটা নিয়ে আরো আলোচনার সুযোগ আছে বলে আমরা মনে করি। 

জনপ্রিয়