সংস্কার ও বিচার ছাড়াই নির্বাচনকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে : নাহিদ ইসলাম

ক্ষমতাতে যাওয়ার জন্য সংস্কার ও বিচার ছাড়াই নির্বাচনকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পুনর্বাসনের জন্য নানা ধরনের পাঁয়তারা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (২৬ মার্চ) সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে নাহিদ ইসলাম বীর শহীদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহীদদের আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। তাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা একটা স্বাধীনতা পেয়েছি। এই বাংলাদেশের মানুষ ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ও অধিকারের জন্য। সেই দেশবিরোধী সংগ্রাম থেকে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং এর ধারাবাহিকতায় আমাদের ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান। আমরা মনে করি, আমাদের যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে এবং বারবার যেটা বেহাত হয়েছে, বারবার রক্ত দিতে হয়েছে জনগণকে। সামনের দিনগুলোতে যাতে আমাদের জনগণকে আর রক্ত দিতে না হয়—এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা আজকের দিনে।
তিনি বলেন, আমরা যে গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচারের জন্য লড়াই করেছি যুগ যুগ ধরে এবং ২০২৪ সালেও আমাদের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে লড়াই করতে হয়েছে, গণঅভ্যুত্থান করতে হয়েছে। আমরা চাই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা বিনির্মাণের মাধ্যমে সেগুলো আবার সংস্কারের মাধ্যমে পুনর্গঠন করে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করতে। যেখানে মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে এবং মানুষকে বারবার নামতে হবে না রক্ত দিতে।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আমরা মনে করি, ৭১ এবং ২৪ আলাদা কিছু নয়, বরং ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই ৭১-এর যে স্পিরিট সেটা পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। সেটা ৫৪ বছরে অর্জিত হতে পারেনি বিধায় একটা ফ্যাসিজম ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশে চেপে বসেছিল। ফলে ৭১-এ যে সাম্যের কথা বলা হয়েছিল ২৪-এ কিন্তু আমরা সেই বৈষম্যহীন সমাজের কথাই বলছি। ফলে যারা এটাকে পরস্পরবিরোধী বা মুখোমুখি করে দাঁড় করাচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য অসৎ এবং আমরা মনে করি ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকে, ছাত্রজনতার বিজয়কে প্রকৃতভাবে উপলব্ধি করতে পারেনি। নতুন তরুণরা যারা নেমে এসেছে, নতুন সময়ের এই বার্তা তারা ধারণ করতে পারছে না।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বর্তমানে ফাটল ধরেছে কিনা—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা মনে করি, জাতীয় ঐক্যের যে সুযোগ ও পাটাতন তৈরি হয়েছিল, আমরা এখনো সেই পাটাতনেই আছি। কিন্তু এখন হয়ত বিভিন্ন দলের অ্যাজেন্ডা আলাদা হচ্ছে। কিন্তু আমরা যদি ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করতে চাই, দেশের স্বার্থকে আমরা রক্ষা করতে চাই, তাহলে আমাদের একই পাটাতনে থেকে পরস্পর সামনে এগোতে হবে।
এ সময় তার সঙ্গে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাছির উদ্দিন পাটোয়ারী ছাড়াও সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।