সোমবার ৩১ মার্চ ২০২৫, ১৬ চৈত্র ১৪৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রকাশিত: ২০:০৮, ২৬ মার্চ ২০২৫

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড

গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিচারের দাবি

গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিচারের দাবি
সংগৃহীত

২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি প্রদানসহ গণহত্যায় জড়িত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিচারের দাবি জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। 

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কানিজ ফাতেমা ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জাতিসংঘের নিকট এ দাবি জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, "আজ ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এইদিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী অন্যায়ভাবে নিরীহ বাঙালিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে নৃশংস গণহত্যা ও গণধর্ষণ চালিয়েছিল। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও পর্যন্ত ৩০ লক্ষ বাঙালিকে গণহত্যা ও ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম হানি করার অপরাধে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কোন বিচার হয়নি যা কখনোই বাংলাদেশের জনগণ মেনে নিবে না।

জাতিসংঘের নিকট দাবি, অবিলম্বে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। একাত্তরে নৃশংস গণহত্যায় জড়িত পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালতে দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। বাঙালির ইতিহাসের কালরাত ভয়াল ২৫ মার্চ। নিরীহ বাঙালির ওপর হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চালানো বর্বর গণহত্যার ভয়াবহ স্মৃতিজড়িত ইতিহাসের এক অধ্যায়। ১৯৭১ সালে চীনের সরবরাহকৃত চায়নিজ রাইফেল ব্যবহার করে পাকিস্তান আমাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছিল।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর চীন রাষ্ট্র বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ২০০৩ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন চীন ১৫ আগস্টে খালেদা জিয়ার ভুয়া জন্মদিনে কেকসহ উপহার পাঠিয়েছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাষ্ট্র চীন ও পাকিস্তান এখনো মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কায়দায় সরিয়ে দিয়ে অবৈধ ও অসাংবিধানিক অন্তবর্তীকালীন সরকারকে অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসিয়ে চীন ও পাকিস্তান পরিকল্পিত ভাবে জঙ্গিবাদ সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

একাত্তরের গণহত্যা ও গণধর্ষণের অপরাধে পাকিস্তান ও চীনকে বাংলাদেশের নিকট অবশ্যই রাষ্ট্রীয় ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। চীনের মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ষড়যন্ত্র ও পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর নৃশংস গণহত্যা এদেশের মানুষ কখনোই ভুলবে না। স্বাধীনতা আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়ার জন্য অপারেশন সার্চলাইট নামক সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ঢাকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালিদের ওপর নির্মমভাবে গণহত্যা চালায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। অভিযান শুরু করার পূর্বে সকল বিদেশি সাংবাদিকদের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।বাঙালিদের ওপর আক্রমণের পর গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এই ঘোষণার পরেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় এবং দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা লাভ করে।

জাতিসংঘের নিকট দাবি, একাত্তরের নৃশংস গণহত্যায় জড়িত পাকিস্তান ও চীনকে জবাবদিহি করে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালতে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাষ্ট্র চীন ও পাকিস্তান যদি বাংলাদেশের নিকট আনুষ্ঠানিক ভাবে ক্ষমা না চায় তাহলে বাংলাদেশকে অবশ্যই এদের সঙ্গে সকল ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে হবে। 

২৫ মার্চের বর্বরতাকে স্মরণ তথা প্রকৃতার্থে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি জাতির চিরন্তন শ্রদ্ধার স্মারক এবং সাক্ষ্য হিসেবে ২০১৭ সাল থেকে ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু আজও পর্যন্ত জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি যা অত্যন্ত দুঃখজনক। অবিলম্বে ২৫ মার্চকে জাতিসংঘ কর্তৃক আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।"

জনপ্রিয়