বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রকাশিত: ২০:০১, ১২ মার্চ ২০২৫

লাকী আক্তারকে গ্রেফতারের দাবিতে শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের অবস্থান

লাকী আক্তারকে গ্রেফতারের দাবিতে শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের অবস্থান
সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের ওপর হামলা করে ‘মব সৃষ্টিকারী’ লাকী আক্তার ও অন্যদের ‘দেশদ্রোহী সেবাদাস’ উল্লেখ করে তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। লাকী আক্তার ও অন্যদের গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ উসমান হাদী।

বুধবার (১২ মার্চ) বিকেল ৪টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনের এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন৷ 

সরেজমিনে দেখা যায়, জুলাই জনতার মানববন্ধন শেষে ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীরা শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনের রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন। লাকী আক্তার ও তার সহযোগী যারা পুলিশের ওপর হামলায় জড়িত ছিল তাদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করবেন বলে জানান। 

এ সময় তারা- ‘শাহবাগ না বাংলাদেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’; ‘শ তে শাহবাগী, তুই হাসিনা তুই হাসিনা’; ‘ল তে লাকী আক্তার, তুই হাসিনা তুই হাসিনা’; ‘বিচার বিচার বিচার চাই, শাহবাগের বিচার চাই’; ‘শাহবাগী/মবতন্ত্র/ সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’; ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’; ‘ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা’; ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’; ‘দিল্লি না ঢাকা’’ ঢাকা ঢাকা’; ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।  

শরীফ উসমান হাদী বলেন, কালকে পুলিশের হাতে লাঠি ছিল না, তারা টিয়ারগ্যাস বা সাউন্ড গ্রেনেডও মারেনি। কিন্তু পুলিশের ওপর আগে হামলা করা হয়েছে। এই পুলিশরা তো কিছু করেনি, কাউকে ধর্ষণ করেনি। তাহলে তাদের ওপর ক্ষোভ কিসের? গতকাল শাহবাগীরা গেছে ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে কিন্তু তারা স্লোগান দিয়েছে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে। তাই পুলিশের ওপর হামলাকারী শাহবাগের কসাই লাকি আক্তার ও দেশদ্রোহী সেবাদাসদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আজকে এখন থেকেই শাহবাগে অবস্থান নিচ্ছি। আমরা এখানেই ইফতার করব। আমরা রাস্তা অবরোধ করব না। কিন্তু এই লাকী আক্তারসহ অন্যদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত আমরা এখান থেকে উঠবো না।

এসময় ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি জানান প্লাটফর্মটির মুখপাত্র শরীফ উসমান হাদী। দাবিগুলো হলো-

১. ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ৯০ দিনের মধ্যে অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। 

২. প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের ওপর হামলা করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে মব সৃষ্টিকারী হামলাকারীদের অতি দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে৷ 

৩. শাপলা কসাই লাকী আক্তার ও অন্যান্যদের গ্রেপ্তার করে ২০১৩ সালের শাহবাগের সব ষড়যন্ত্র উন্মোচন করতে হবে৷ 

৪. জাতিসংঘকে অন্তর্ভুক্ত করে শাপলা ও সব গণহত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে।

৫. জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার শুরু করে অতি দ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে৷ 

উসমান হাদী বলেন, আওয়ামী লীগ সর্বশেষ ট্রাম্প কার্ড হিসেবে শাহবাগীদের ব্যবহার করেছে। তারা আনসার, টোকাই, রিকশাওয়ালা হিসেবে ফিরে এসেছে৷ আমরা শাহবাগী হলে তাদের শাহবাগে লটকিয়ে রাখতাম। কিন্তু আমরা শাহবাগী না, তাই আমরা সরকারের কাছে বিচার চাই। আমরা শাহবাগ থেকে ইনসাফের বাংলাদেশে যাব। আমরা আর শাপলায় যাব না। আজকে লাকীর গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা ঘোষণা করলাম। ততদিন পর্যন্ত আমরা শাহবাগ ছাড়ব না। 

তিনি বলেন, এ দেশে ১৫ বছর ধরে যে ফ্যাসিবাদ হয়েছে, হাজার হাজার আয়নাঘর হয়েছে, আমার মা-বোনদের রোজা ভাঙিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে, আল্লামা সাঈদীকে মেডিকেলে চিকিৎসার নামে হত্যা করা হয়েছে, মোশতাককে জেলে হত্যা করা হয়েছে, মাইকেল চাকমাকে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে, সর্বশেষ জুলাইয়ে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে আমাদেরকে ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে। এদিকে এসব হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দিয়েছে শাহবাগ। এখন সময় এসেছে শাহবাগকে নির্মূল করার। যদি এসব শাহবাগীদের বিচার করতে ঈদের দিন পর্যন্ত থাকতে হলে আমরা এখানে থাকতে রাজি আছি। 

মানববন্ধনে প্লাটফর্মটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবেদ বলেন, নতুন করে শাহবাগ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। শাহবাগের লাকি এখন রাস্তায় অথচ তাদের জেলে থাকার কথা। নতুন করে কেউ শাহবাগ গড়ার চিন্তা করলে আপনারা ভুল ভাবছেন। আমরা তাদের সেই সুযোগ দেব না। 

ঢাবি শাখার সদস্য সচিব ফাতিমা আক্তার ঝুমা বলেন, আমরা দেখছি, সারা দেশে ধর্ষণের প্রতিবাদে মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে, সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। এই শাহবাগী যারা আলেমদেরকে হত্যা করতে সহযোগিতা করেছে তারা আজকে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। যেই শাহবাগকে খারিজ করে চব্বিশ হয়েছে সেখানে আর কখনো শাহবাগ হবে না, এ দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি হবে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের বলেন, এই লাকি আক্তারদের ঘুড়ি বাংলাদেশের আকাশে কিন্তু নাটাই ভারতের হাতে। তাদের এই উদ্দেশ্য আমরা বেঁচে থাকতে সফল হতে দেব না।

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

জনপ্রিয়