প্রেস সচিব
জেনেভা ক্যাম্পের শিশুদের জন্য মানসম্পন্ন উর্দু একাডেমির প্রয়োজন

জেনেভা ক্যাম্পে বেড়ে ওঠা শত-শত বিহারি শিশুর জন্য উর্দু শেখার একটি মানসম্পন্ন একাডেমি বা স্কুল গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে মনে করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) তাঁর ভেরিফায়েড আইডি থেকে শেয়ার করা এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
পোস্টে প্রেস সচিব লেখেন, জেনেভা ক্যাম্পে বেড়ে ওঠা শত-শত বিহারি শিশুর জন্য কাব্যিক ও চমৎকার উর্দু শেখা, বলা ও লেখার জন্য একটি মানসম্পন্ন একাডেমি বা স্কুল গড়ে তোলা প্রয়োজন। ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ ছিল মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসার প্রতীক। বাংলাদেশের অন্যান্য ভাষা ও উপভাষার মানুষদের মাঝে এই আদর্শ ছড়িয়ে পড়ুক।
প্রেস সচিব আরও লেখেন, এই একাডেমিতে উর্দুর একটি স্বতন্ত্র উপভাষা, পুরোনো ঢাকার ভাষাও শেখানো যেতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পুরোনো ঢাকার উর্দু পুনরুজ্জীবিত করার কিছু উদ্যোগ দেখা গেছে। তবে যদি শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক স্তর থেকেই উর্দু শেখানোর জন্য যথাযথ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকে, তাহলে বাংলাদেশে এই ভাষা ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে চলে যাবে।
উনিশ শতকে বাংলা অঞ্চলের মাদ্রাসাগুলোতে উর্দু শিক্ষা দেওয়া হতো উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, হযরত কারামত আলী জৌনপুরীর মতো উপমহাদেশের অন্যতম বিশিষ্ট ইসলামী বক্তারা বাংলার সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিম সমাজে ইসলাম প্রচারের সময় প্রায়ই উর্দু ভাষায় বক্তব্য দিতেন। তৎকালীন জমিদার শ্রেণির অভিজাত মুসলমানরা ঘরে উর্দুতে কথা বলতেন। ব্রিটিশ শাসনামলে সেনানিবাসে অবস্থানকারী বাঙালি সৈন্যরা ভারতবর্ষের অন্যান্য অংশের সৈন্যদের সঙ্গে উর্দুতেই যোগাযোগ করতেন।
প্রেস সচিব লেখেন, ষাটের দশকে স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে পূর্ব বাংলায় সিনেমা সংস্কৃতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, তখন অনেক শীর্ষস্থানীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা উর্দুতে সিনেমা তৈরি করতেন। কিংবদন্তি কবি সৈয়দ শামসুল হক, খ্যাতিমান পরিচালক ও সাহিত্যিক জহির রায়হানসহ অনেক বাঙালি নির্মাতা উর্দু ভাষায় কাজ করেছেন। ১৯৬০-এর দশকের ঢাকার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল ভাষাগতভাবে আরও বৈচিত্র্যময় ছিল। সেই সময় উর্দু মাধ্যমের স্কুলও ছিল, যেখানে বিহারি ও উত্তর ভারতীয় অভিবাসী পরিবারগুলোর শিশুরা শিক্ষা গ্রহণ করত।