শহীদ দিবসের নিরাপত্তা
‘নিষিদ্ধ সংগঠনের’ বিশৃঙ্খলার চেষ্টা ঠেকাতে তৎপর র্যাব

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে সার্বিকভাবে সকল ধরনের ঝুঁকি পর্যালোচনা করে সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
নিষিদ্ধ ঘোষিত কোনো দল বা সংগঠনের সদস্যরা যাতে শহীদ মিনার অঙ্গনে প্রবেশ করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে র্যাব তৎপর রয়েছে।
র্যাব সদর দপ্তর জানায়, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এছাড়াও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেবেন। ২১ শে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ অন্যান্য শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। এছাড়াও উক্ত সময়ে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে জেলা/মেট্রোপলিটন এলাকা/থানাভিত্তিক স্থানীয় র্যাবের সহযোগিতা পেতে টহল ইনচার্জ অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত র্যাব ব্যাটালিয়ন অধিনায়ককে অবহিতকরণসহ র্যাবকে জানানোর জন্য সর্বসাধারণকে র্যাবের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।
২১ ফেব্রুয়ারির নিরাপত্তা জোরদারে জারি করা সব ধরনের আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক নির্দেশনা বাস্তবায়নে র্যাব ফোর্সেস কাজ করছে। ২১ শে ফেব্রুয়ারি উদযাপনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব নিম্নোক্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
১. আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি রোধে ঢাকাসহ সারাদেশে পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়েছে। র্যাব ফোর্সেসের সব ব্যাটালিয়ন সারা দেশে তাদের স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে নিরাপত্তা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
২. অগ্রিম পদক্ষেপ হিসেবে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে র্যাবের সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির মাধ্যমে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
৩. কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের জন্য র্যাব-৩ এর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় উল্লিখিত এলাকার অবজারভেশন পোস্ট এবং চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে র্যাব অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে প্রয়োজনীয় সমন্বয়পূর্বক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।
৪. শহীদ মিনারের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে র্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড প্রয়োজনীয় সুইপিং সম্পন্ন করবে। পাশাপাশি যেকোনো উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য র্যাবের স্পেশাল ফোর্স সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত রয়েছে।
৫. বিভিন্ন এলাকা থেকে শহীদ মিনারমুখী রাস্তার মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় তল্লাশির মাধ্যমে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
৬. শহীদ মিনারসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানস্থলে আসা নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ইভটিজিং বা যেকোনো ধরনের হয়রানি প্রতিরোধে সতর্ক দৃষ্টি রাখবে র্যাব।
৭. ভার্চুয়াল জগতে যেকোনো ধরনের গুজব/উসকানিমূলক তথ্য/মিথ্যা তথ্য ছড়ানো প্রতিরোধে র্যাব সাইবার মনিটরিং টিম অনলাইনে সার্বক্ষণিক নজরদারি অব্যাহত রাখছে।
৮. কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন মেট্রোপলিটন এলাকা, বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সকল শহীদ মিনার এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ইনার পেরিমিটার ও শহীদ মিনার সংলগ্ন এলাকাকে ভিডিও সার্ভিল্যান্সের আওতায় আনতে সিসিটিভি/আইপি ক্যামেরা এবং মনিটরিং কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
৯. ব্যাটলিয়নগুলো নিজ নিজ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে তাদের অধিক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়পূর্বক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। র্যাব সদর দপ্তরে কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হবে।
১০. নিষিদ্ধ ঘোষিত দল/সংগঠনের সদস্যরা যাতে শহীদ মিনার অঙ্গনে প্রবেশ করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে র্যাব তৎপর রয়েছে।