এনআইডি আইন পর্যালোচনায় বৈঠক ডেকেছে ইসি
জাতীয় পরিচয়পত্রের নিবন্ধন (এনআইডি) আইন পর্যালোচনা করার জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) একটি বৈঠক ডেকেছে। আগামী রবিবার (১২ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় নির্বাচন ভবনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) ইসির সংস্থাপন শাখার উপসচিব মো. শাহ আলম এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেছেন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ২০২৩ সালে আওয়ামী সরকারের অধীনে একটি নতুন আইন পাশ করা হয়, যার মাধ্যমে এনআইডি কার্যক্রম ইসির কাছ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে ন্যস্ত করার কথা বলা হয়। ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০২৩’ শীর্ষক এই আইনে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে, তবে সুরক্ষা সেবা বিভাগে এই কার্যক্রম স্থানান্তরিত না হওয়া পর্যন্ত এটি ইসির অধীনে থাকার কথা বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এনআইডি ইসির অধীনে থেকেই পরিচালিত হচ্ছে।
এদিকে, সুশীল সমাজ, সাধারণ মানুষ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা এনআইডি কার্যক্রম ইসির অধীনে রাখার পক্ষে কথা বলছেন। তাদের দাবি, ২০২৩ সালের নতুন আইনটি বাতিল করা উচিত, অথবা অন্তত সেই আইনে সংশোধন করে এনআইডি সেবা ইসির অধীনে রাখার বিষয়টি যুক্ত করা উচিত।
ইসি থেকে এনআইডি হস্তান্তরের বিরোধিতা করেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেছেন, “এনআইডি কেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হবে, সে বিষয়টি পরিষ্কার নয়। যদি এটি মন্ত্রণালয়ের কাছে চলে যায়, তাহলে ভবিষ্যতে ভোটার লিস্ট নিয়ে সমস্যা তৈরি হতে পারে। একসময় এ নিয়ে বিভ্রান্তি হতে পারে।”
ইসি কর্মকর্তারাও এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করছেন এবং এনআইডি প্রকল্পের বেশ কিছু কর্মীও আন্দোলন করছেন। তাদের মতে, এনআইডি কার্যক্রম ইসির অধীনে রাখলে নতুন কোনো লোকবল তৈরি করতে না হলেও বর্তমান কর্মীরা তাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কাজ করছে। অন্যত্র এটি নিয়ে গেলে নাগরিক সেবা কমতে পারে এবং তথ্যের নিরাপত্তাও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
ইসির উপ-সচিব মো. শাহ আলমের সই করা অফিস আদেশে বৈঠকের অন্য দুটি আলোচ্য বিষয়ও রাখা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিশেষ ভোটার নিবন্ধন সংক্রান্ত ‘বিশেষ তথ্য ফরম (ফরম-২ এর অতিরিক্ত তথ্য)’ ব্যবহার নিয়ে আলোচনা। আরেকটি হলো, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জনবল কাঠামো ও সরঞ্জামাদি হালনাগাদকরণ সম্পর্কে আলোচনা।
এই বৈঠকটি, যা ২১ নভেম্বর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এএমএস নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশনের দ্বিতীয় বৈঠক, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো পর্যালোচনার জন্য ডাকা হয়েছে।