থানায় লুট হওয়া অস্ত্র দিয়ে শাহিদাকে গুলি করে তৌহিদ
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে এক্সপ্রেসওয়েতে শাহিদা আক্তার (২৪) নামের তরুণীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি তৌহিদ শেখ তন্ময়কে (২৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) ভোলার ইলিশা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহিদাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে তৌহিদ। বিয়ের চাপ দেওয়ায় শাহিদাকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে তৌহিদ। যে পিস্তলটি দিয়ে তৌহিদ গুলি করেছে সেটি গত ৫ আগস্ট ওয়ারী থানা থেকে লুট করেছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে তৌহিদ।
গ্রেপ্তারকৃত তৌহিদ শেখ তন্ময় রাজধানী ঢাকার ওয়ারীর বনগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। নিহত তরুণীর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তৌহিদ কৌশলে শাহিদার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় শাহিদাকে হত্যা করে তৌহিদ। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তলটি কেরানীগঞ্জের একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আজাদ বলেন, “সন্দেহভাজন হিসেবে তৌহিদকে গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের একাধিক দল কাজ করছিল। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার রাতে আমাদের একটি দল ভোলা জেলায় অভিযান চালায়। সেখান থেকে তৌহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তৌহিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কেরানীগঞ্জের একটি পুকুর থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। ওই অস্ত্র দিয়ে শাহিদাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। পিস্তলটি গত ৫ আগস্ট ওয়ারী থানা থেকে লুট করেছিল তৌহিদ।”
তিনি আরও বলেন, “তৌহিদের সঙ্গে শাহিদার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর মধ্যেই তৌহিদ অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বিষয়টি শাহিদা জানতে পার। এ নিয়ে তাদের মধ্যে একাধিকবার ঝগড়া হয়। গত শুক্রবার রাতে শাহিদাকে মুঠোফোনে ওয়ারীর বাড়ি থেকে মাওয়ায় ইলিশ খাওয়ার কথা বলে ডেকে আনে তৌহিদ। শাহিদাকে নিয়ে তিনি রাতভর এক্সপ্রেসওয়েতে ঘোরাঘুরি করে। শনিবার ভোরে তারা শ্রীনগর দোগাছি এলাকায় হাঁটাহাঁটি করে। এ সময় শাহিদা কথা প্রসঙ্গে তৌহিদকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। তৌহিদ বিয়ে করতে অস্বীকার করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে তৌহিদ পিস্তল দিয়ে শাহিদাকে গুলি করে। পরে সেখান থেকে সে পালিয়ে যায়।”
এর আগে, শনিবার ঢাকা–মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের সমসপুর এলাকার দোগাছি সার্ভিস সড়ক থেকে শাহিদা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের পাশে কয়েকটি গুলির খোসা পড়ে ছিল। তার শরীরে আটটি গুলির ছিদ্র ছিল। শাহিদা ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার বেগুনবাড়ির বরিবয়ান এলাকার বাসিন্দা। পরিবারের সঙ্গে তিনি ঢাকার ওয়ারী এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
এ ঘটনায় শনিবার রাতে নিহত তরুণীর মা জরিনা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলাটি করেন। পরে রবিবার সকালে ওই মামলায় একমাত্র নাম উল্লেখ করে আসমি করা হয় তৌহিদকে।