ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করলে কাউকে ছাড় দেবো না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধা কোটাবিরোধী আন্দোলন করার নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে এমন হুঁশিয়ারী দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা কোটা আন্দোলন করছে সেটা নিয়ে আমাদের বলার কিছু নেই। কিন্তু কথা হচ্ছে তারা যদি ভাঙচুর করে, তারা যদি এভাবে কারও পরামর্শে বা নেতৃত্বে ভাঙচুর করে, ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করে, তাহলে আমরা তাদের কাউকে ছাড় দেবো না।
তিনি বলেন, ধ্বংস করলেই, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলেই, রক্ত ঝরালেই, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের স্বার্থে আমাদের কাজটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করবেন। তাদের প্রতি তাই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেখানে ভাঙচুর হবে, যেখানেই হত্যাযজ্ঞ হবে, যেখানেই রক্তপাত হবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেই কাজটা, দায়িত্বটা পালন করবে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের ছাত্রদের মনে হয় একটু অপেক্ষা করা উচিত ছিল। এ বিচারে শেষ পর্যন্ত কি হয় সেটা দেখা উচিত ছিল। না দেখেই নানা ধরনের প্রোগ্রাম দিচ্ছে, রাস্তা অবরোধ করছে। রাস্তা অবরোধ করলে তো সবাই ভুক্তভোগী হয়ে যায়। অনেক কাজে বিঘ্ন ঘটছে।
তিনি বলেন, তারা কোর্টে যেতে পারেন, যেটা প্রধান বিচারপতি বলেছেন কিংবা তারা এসে যোগাযোগ করতে পারেন। এসব কিছুই করতে পারেন, এ সমস্ত রাস্তা তাদের জন্য খোলা রয়েছে। এ খোলা রাস্তায় না গিয়ে, এ ধরনের রাস্তায় যাওয়া তাদের জন্য আমি মনে করি ঠিক ভালো না। এই জায়গাটি থেকে তাদের চলে আসা উচিত। এটাই হলো তাদের কাছে মেসেজ।
গতকালকে ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ। আজকে সারা দেশে বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমেছে। এখন পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি কিন্তু ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, কমিউনিস্ট পার্টি কিংবা ছাত্রদল- এগুলো আমি সংজ্ঞায়িত করছি না। আমি বলছি ছাত্ররা। ছাত্ররা হয়তো একদল পক্ষে রয়েছে আরেক দল বিপক্ষে রয়েছে। হতে পারে এগুলো।
তিনি বলেন, কোন দল পক্ষে কোন দল বিপক্ষে সেগুলো আমাদের জানার বিষয় নয়। আমাদের বিষয় হলো তারা নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাউকে কষ্ট না দিয়ে তাদের কথাগুলো যাতে বলে। তাহলে সবাই সেটা উপলব্ধি করতে পারবে।
আর যে মারামারির কথা বলছেন এগুলো ছাত্রদের মধ্যে। সবসময়ই একমত হতে পারে না। মতবিরোধ থাকে মতবিরোধ হলেই বাগ-বিতণ্ডা হয়। সেই রকমই কিছু কিছু জায়গায় হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেখেছি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখেছি। ঢিল ছোড়াছুড়ি আমরা দেখেছি, এগুলো সবই দেখেছি।
আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীকে বলেছি যে পর্যন্ত প্রয়োজন না হয়, সেই পর্যন্ত যেন ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্যে না প্রবেশ করে।
সারাদেশে অবরোধ করা হচ্ছে। এতে আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে কি না, এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ভেঙে পড়েছে এ কথায় আমি একমত নই। আইনশৃঙ্খলা সঠিকভাবেই আছে। আপনারা চলছেন আমিও চলছি, সবই চলছে সবকিছুই হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা ভুল করছে জানিয়ে তিনি বলেন, রাস্তা অবরোধ করে দাবি আদায়, এটা সঠিক পন্থা নয়। রাষ্ট্রপতির কাছে তারা আবেদন দিয়েছে, সেটি স্টাডি করতে হবে, রাষ্ট্রপতি মহোদয় আমাদেরকে একটা নির্দেশনা দেবেন, সেটা নিয়ে আমরা কাজ করবো।
শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে, এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, এগুলো শেখানো বক্তব্য, এগুলো ছাত্রদের বক্তব্য নয়। কটুক্তি যে করছে এগুলো তারা করেনি। তাদের এগুলো হয়তো কেউ শিখিয়ে দিয়েছে, তাদের শেখানো বুলিই তারা বলেছেন। আমার মনে হয় তারা এই বুলি ভুলবশতই করেছে।
তিনি বলেন, আমরা যেগুলো দেখছি তাদের কাছে যে সমস্ত মেসেজ বিভিন্ন মহল থেকে দিচ্ছে, সেগুলো আমরা লক্ষ্য করছি। সেখানে তাদেরকে এ ধরনের আন্দোলন করার জন্য উপদেশ দিচ্ছে।