লালনভক্ত বৃদ্ধার ঘর ভাঙচুর : ব্যবস্থা নিতে কমিশনের সুয়োমটো
মসজিদে মাইকিং করে লালনভক্ত বৃদ্ধার ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদনটি এসেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নজরে। এই বিষয়ে অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে কমিশন। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত ও আসামি গ্রেপ্তারের সর্বশেষ অগ্রগতি আগামী ৩০ জুলাই কমিশনকে অবহিত করতে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে মানবাধিকার কমিশন।
রবিবার (৩০ জুন) মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, কুষ্টিয়ায় মসজিদে মাইকিং করে চায়না বেগম নামে লালনভক্ত ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধার ঘর ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীর দাবি, প্রতিবাদ করতে গিয়ে মারধরেরও শিকার হয়েছেন তিনি। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের এ ঘটনায় কুষ্টিয়া সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
অভিযোগে ওই এলাকার সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য এনামুল হক, মোশারফ হোসেন, আনার মণ্ডল ও সাইদুল হাজির নাম উল্লেখসহ ৪৫-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, বুধবার (২৬ জুন) সকাল ৬টার দিকে অভিযুক্তরা চায়না বেগমের বাড়িঘর ভাঙচুর করে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করেছেন। এমনকি রাতের আঁধারে সেখানে তাকে পেলে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন অভিযুক্তরা।
চায়না বেগম জানান, তার স্বামী আধ্যাত্মিক সাধক লালন সাঁইজির অনুসারী ছিলেন। জীবনের শেষ দিনগুলো স্বামীর কবরে মাথা ঠেকিয়ে কাটিয়ে দেবেন বলে ভেবেছিলেন তিনি। লালনভক্ত এ বৃদ্ধা বলেন, ‘আমার স্বামী মৃত্যুর আগে বলে গেছেন, কোথাও জায়গা না হলে তুমি আমার কবরের পাশেই থাকবা। প্রতি বছর বাতাসার সিন্নি হলেও করবা। তার কথা রাখতেই ঘরখানা তৈরি করি। কিন্তু এলাকার লোকজন আমাকে না জানিয়েই সব ভেঙে ফেলেছে।’
মানবাধিকার কমিশনের সুয়োমটোতে উল্লেখ রয়েছে, মসজিদে মাইকিং করে লালনভক্ত ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধার ঘর ভাঙচুর এবং প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধাকে মারধর করার অভিযোগটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
সংবাদ প্রতিবেদন মতে, এ ঘটনায় কুষ্টিয়া সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ অবস্থায় ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত ও আসামি গ্রেপ্তারের সর্বশেষ অগ্রগতি আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করতে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছে।