শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রকাশিত: ১৮:৫১, ১২ জুন ২০২৪

দুর্যোগ মোকাবিলায় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানালেন প্রধানমন্ত্রী

দুর্যোগ মোকাবিলায় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানালেন প্রধানমন্ত্রী
সংগৃহীত

ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে দুর্যোগপ্রবণ দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। ঘূর্ণিঝড় রেমালে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে। এজন্য ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যায় সে বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

বুধবার (১২ জুন) জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সংসদ সদস্য ও ঢাকা-১৪ আসনের এমপি মো. মাইনুল হোসেন খানের লিখিত প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন। সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

তিনি বলেন, সরকার বন্যাসহ অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবিলায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে; যেমন- বন্যা ও আপদকালীন সময়ে দুস্থ ও অসহায় জনগণের আশ্রয়ের জন্য বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, মুজিব কিল্লা নির্মাণ এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের জন্য উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ত্রাণ সামগ্রী দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের মধ্যে বিতরণের সুবিধার্থে প্রতিটি জেলায় ত্রাণ গুদাম কাম তথ্য কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। যাতায়াতের সুবিধার্থে কাঁচা রাস্তা নির্মাণ, কাঁচা রাস্তায় হেরিং বোন বন্ড করাসহ প্রয়োজনীয় স্থানে সেতু/কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী :

>ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগ মেগা ডিজাস্টার মোকাবিলার লক্ষ্যে চীনের সহযোগিতায় ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় এক হাজার জমির ওপর একটি অত্যাধুনিক ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (এনইওসি) স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৮.০ রিখটার স্কেলের অধিক ভূমিকম্প সহনীয় এই ভবনের জন্য প্রকল্প প্রণয়নের মাধ্যমে বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে। 

>ভূমিকম্পসহ বড় ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় ১টি Humanitarian Staging area নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে

>দুর্যোগের সময়ে বিপদাপন্ন মানুষ ও তাদের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ এবং প্রাণিসম্পদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ৪৫০টি মুজিব কিল্লা নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। আরো ৩৫০টি মুজিব কিল্লা নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

>ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে বিপদাপন্ন মানুষ ও তাদের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ এবং প্রাণিসম্পদের সুরক্ষা প্রদানের জন্য আরো ১২০টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

>বন্যার সময় বিপদাপন্ন মানুষ ও তাদের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ এবং প্রাণিসম্পদের সুরক্ষা প্রদানের জন্য ৫০০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

>বন্যার সময় বিপদাপন্ন মানুষ ও তাদের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ এবং প্রাণিসম্পদের সুরক্ষা প্রদানের জন্য ৫০০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

>উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় সেল ও তথ্যকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা প্রচারের জন্য ১০০টি উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্যকেন্দ্র কাম ত্রাণ গুদাম নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

>অধিক বজ্রপাতপ্রবণ ১৫টি জেলায় সৃষ্ট বজ্রপাত থেকে মানুষ এবং প্রাণিসম্পদকে সুরক্ষা প্রদানের জন্য ৬৭৯৩টি বজ্রনিরোধক ব্যবস্থা স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

>দুর্যোগের সময় অল্প সময়ে দুর্গত এলাকার জনগণ যাতে নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে পারে, সহজে চিকিৎসা সেবা পেতে পারে, গবাদিপশু দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকল্পে গ্রামীণ রাস্তায় পরিবেশবান্ধব ব্লক ব্যবহারের মাধ্যমে ৫০০০ কিলোমিটার হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

>বন্যাপ্রবণ এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বসতবাড়ির ভিটি উঁচুকরণের মাধ্যমে দুর্যোগ সহনীয় ঘর তৈরিতে সহায়তা করাসহ দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে দেশের অধিক বন্যাপ্রবণ ০৫টি জেলার বসতবাড়ির ভিটি উঁচুকরণের পরিকল্পনা রয়েছে।

>ভূমিকম্প ঝুঁকি হ্রাসে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে Nationwide Resilience Project (NRP) এবং আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্প ২য় পর্যায় বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

>বন্যার সময় দ্রুততম সময়ে মৃত ব্যক্তিদের দাফন/ সৎকার ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির মানবিক মূল্য ও সম্মান সংরক্ষণ করার লক্ষ্যে অধিক বন্যাপ্রবণ এলাকায় বন্যাকালীণ সময়ে মৃত ব্যক্তিদের দাফন/সৎকারের জন্য কবর ও শ্মশান উন্নয়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

>দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় দক্ষ জনবল তৈরি ও জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক মানের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এনডিএমআরটিআই) স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।

আ/ম

জনপ্রিয়