যেভাবে আজকের এই দিন ক্যালেন্ডারের পাতায়
খ্রিস্টের জন্মের ৪৬ বছর আগে পৃথিবীতে বছর হিসাব করা হতো একটু অন্যভাবে। সাধারণভাবে ধরা হত, ৩৬৫ দিনে শেষ হবে একটা বছর। কিন্তু এরমধ্যে একটা গলদ ধরা পড়লো। খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে গ্রীক জ্যোতির্বিদ এবং গণিতবিদ সোসিজেনেস অব আলেকজান্দ্রিয়া ক্যালেন্ডারের হিসাবের সমস্যাটি তৎকালীন রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজারকে বুঝালেন।
বিষয় ভালোভাবে বুঝে নিলেন সিজার। এবং তিনি একটি ক্যালেন্ডার বানাতে বললেন এবং পরবর্তী বছর (৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) থেকেই তা কার্যকরের নির্দেশ দিলেন। সম্রাট জুলিয়াস সিজারের নামেই সেই ক্যালেন্ডারের নামকরণ হলো- ‘জুলিয়ান ক্যালেন্ডার’।
ব্রিটানিকার তথ্যমতে, জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে বছরের হিসাবটা আগের ক্যালেন্ডারের থেকে একটু অন্যভাবে করা হল। দেখা গেল, একটা পার্থিব বছর শেষ হতে প্রকৃতপক্ষে ৩৬৫ দিনের কিছু বেশি সময় লাগে। সঠিকভাবে হিসাব করলে এক বছরে গড়ে ৩৬৫.২৪২১৯ সৌর দিবস (‘মিন সোলার ডে’) হয়। প্রতি বছরে গড়ে .২৫ দিন বেশি হিসাব করলে চার বছরে মোট একটি দিন বেশি হয়ে যায়।
দেখা গেল, পার্থিব বছরের সময়ের ক্ষয়ক্ষতির প্রায় পুষিয়ে দেয়া যায় চার বছর অন্তর ফেব্রুয়ারি মাসের সঙ্গে একটা দিন যোগ করে দিলে। এর সেই থেকেই জন্ম হল ২৯ ফেব্রুয়ারির। যার নাম ‘লিপ ডে’। আর এই দিনটি যে বছরে যুক্ত হয় সেই বছরটার নাম ‘লিপ ইয়ার’।
প্রতি চার বছর অন্তত একটি দিন যোগ করার সিস্টেম চলল প্রায় ১৬০০ বছর। এরপর ১৫৮২ খ্রিস্টাব্দে তদানীন্তন পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি ক্যালেন্ডারে ‘লিপ ডে’ আরও নিখুঁতভাবে সাজানোর পরিকল্পনা করলেন এবং নতুন ক্যালেন্ডার চালু করলেন। যা আজও পৃথিবীজুড়ে অনুসরণ করা হয়।
হিসাব করলে দেখা যায়, যেহেতু পার্থিব বছরের আয়ু ৩৬৫.২৪২১৯ গড় সৌর দিবস তাই প্রতি ৪০০ বছরে ৯৭টি দিন বেশি হয়। সেই দিনগুলিকে পার্থিব বছরের হিসেবের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে হলে কোনও শতাব্দীর যে বছরগুলির শেষে দুটি শূন্য (০) রয়েছে তাকে ৪০০ দিয়ে ভাগ করতে হবে। যদি কোনো ভাগশেষ থাকে তাহলে সেই বছরগুলি লিপ ইয়ার হবে না। আর ভাগশেষ না থাকলে, সেগুলি লিপ ইয়ার হবে। এই কারণে ১৬০০ সাল ইয়ার হলেও ১৭০০, ১৮০০ এবং ১৯০০ সাল লিপ ইয়ার ছিল না। একইভাবে ২০০০ লিপ ইয়ার হলেও ২১০০, ২২০০ এবং ২৩০০ সাল লিপ ইয়ার হবেনা।
সপক