এবার মালদহে বাংলাদেশিদের জন্য হোটেল বন্ধ
এবার ভারতের মালদহের হোটেল মালিকরা বাংলাদেশিদের জন্য হোটেল ভাড়া না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশে কথিত ভারতবিরোধী কার্যক্রম, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও পতাকার অবমাননার প্রতিবাদে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
মালদহ হোটেল মালিকদের সংগঠন মালদা হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘আমরা আমাদের হোটেলগুলোর বাংলাদেশি অতিথিদের কাছে ভাড়া দেব না। বাংলাদেশে যেভাবে ভারতবিরোধী কার্যকলাপ হচ্ছে, যেভাবে আমাদের দেশকে অসম্মান করা হচ্ছে, তাতে আমরা ক্ষুব্ধ এবং গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তাই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী আরও বলেন, ‘মালদহে ৯৩টি হোটেল রয়েছে। আজ বুধবার থেকে এসব হোটেলে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। ইতিমধ্যে জেলা পুলিশকে অ্যাসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসা করতে আসা এক ব্যক্তি বলেন, ‘এ ধরনের সিদ্ধান্ত দুই দেশের মানুষের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের অবনতি ঘটাবে।’
তবে মালদহের চিকিৎসকেরা এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। কয়েকজন চিকিৎসক বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন। কোনোভাবেই একজন রোগীর চিকিৎসার অধিকার কেড়ে নেওয়া উচিত নয়। এমনকি আহত যুদ্ধবন্দীদেরও চিকিৎসা করা হয়।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চিকিৎসক টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়াকে বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, পতাকার অবমাননাসহ বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। কিন্তু অসুস্থদের চিকিৎসা না করাটা আমরা ডাক্তার হিসেবে যে শপথ নিয়েছি, তার লঙ্ঘন হবে। আমরা শপথ নিয়েছি, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে সব রোগীর চিকিৎসা করব।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মালদহে প্রতি মাসে অন্তত ৮০০ বাংলাদেশি বিভিন্ন হোটেলে থাকেন। তারা চিকিৎসা, ব্যবসা বা বেড়ানোর উদ্দেশে মহাদিপুর স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করেন। তারা মূলত কলকাতা, চেন্নাই, ব্যাঙ্গালুরু বা দিল্লির মতো বড় শহরে যাওয়ার জন্য মালদহকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করেন।
এর আগে গত রোববার ত্রিপুরার হোটেল মালিকেরা বাংলাদেশিদের হোটেল ভাড়া দেবেন না বলে ঘোষণা দেন। এর দুই দিন পর মালদহের হোটেল ব্যবসায়ীরাও একই ধরনের ঘোষণা দিলেন।
তারও আগে কলকাতার বেশ কয়েকজন চিকিৎসক এবং মানিকতলা এলাকার জেএন রায় হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার ঘোষণা দেয়।