চার্লি চ্যাপলিনের ১৩৬তম জন্মবার্ষিকী
নিঃশব্দ চলচ্চিত্রের সেই কিংবদন্তিকে আজও মনে রাখে বিশ্ব

আজ ১৬ এপ্রিল, বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা, পরিচালক ও সুরকার স্যার চার্লস স্পেনসার চ্যাপলিন—অথবা আমাদের সবার প্রিয় চার্লি চ্যাপলিনের ১৩৬তম জন্মবার্ষিকী। ১৮৮৯ সালের এই দিনে লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই মহান শিল্পী, যিনি নিঃশব্দ চলচ্চিত্রের যুগে একাই হয়ে উঠেছিলেন কৌতুক, করুণা ও মানবতার প্রতীক।
চ্যাপলিনের কালজয়ী চরিত্র ‘দ্য লিটল ট্রাম্প’—টুপি, বাঁকা গোঁফ, ঢিলেঢালা প্যান্ট ও একটি ছোট লাঠি হাতে যে চরিত্র বিশ্বব্যাপী দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছিল—আজও চলচ্চিত্র ইতিহাসের সবচেয়ে আইকনিক প্রতীক।
তার শৈশব কেটেছে দারিদ্র্য, অনাহার আর সংগ্রামে। বাবার অনুপস্থিতি ও মায়ের মানসিক অসুস্থতা তাকে জীবনের কষ্টের স্বাদ অল্প বয়সেই শিখিয়েছিল। কিন্তু সেই কষ্টই যেন তাকে গড়েছিল এমন একজন শিল্পী হিসেবে, যিনি মানুষের হাসির আড়ালে সমাজের বাস্তবতা তুলে ধরতে জানতেন।
চ্যাপলিনের চলচ্চিত্রগুলো যেমন ‘দ্য কিড’ (১৯২১), ‘সিটি লাইটস’ (১৯৩১), ‘মডার্ন টাইমস’ (১৯৩৬) এবং ‘দ্য গ্রেট ডিক্টেটর’ (১৯৪০)—শুধু বিনোদন নয়, বরং মানবিক বার্তা বহন করে। বিশেষ করে ‘দ্য গ্রেট ডিক্টেটর’ চলচ্চিত্রে হিটলারকে ব্যঙ্গ করে তিনি শিল্পের শক্তিকে ব্যবহার করেছিলেন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে।
তার কৃতিত্ব স্বীকৃতি পেয়েছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে। ১৯৭২ সালে তিনি পেয়েছিলেন সম্মানসূচক অস্কার এবং ১৯৭৫ সালে রানী এলিজাবেথ তাঁকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন।
১৯৭৭ সালের বড়দিনে সুইজারল্যান্ডে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন চ্যাপলিন। মৃত্যুর পর তার কফিন চুরি হলেও তা উদ্ধার হয় নিরাপদেই। কিন্তু সময়ের কফিনে আটকে যায়নি তার কর্ম ও দর্শন। বরং সময় যত এগিয়েছে, ততই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে তার সৃষ্টি ও বার্তা।
আজ তার জন্মদিনে গুগল ডুডল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে #ChaplinDay ট্রেন্ড। পৃথিবীর নানা প্রান্তে সিনেমাপ্রেমীরা স্মরণ করছে সেই মানুষটিকে, যিনি নিঃশব্দ থেকে বলে গেছেন সবচেয়ে জোরালো কথা।