ঢাকায় মেহের আফরোজ শাওন, কলকাতায় লগ্নজিতা!
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বহুল চর্চিত হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ থেকে আলোচিত হয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ পত্নী ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন।
তিনি বিজয়ের মাস নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তারই পাশাপাশি কলকাতা থেকে বাংলাদেশ নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে বিপাকে পরেছেন টলিপাড়ায় গায়িকা হিসেবে খুবই জনপ্রিয় লগ্নজিতা চক্রবর্তী।
মহান বিজয়ের মাস ডিসেম্বর শুরু হয়েছে বাঙালিদের। ১৯৭১ সালে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয়ে এ বিজয়।
বিজয়ের মাসে ফেসবুকে স্ট্যাটাসে নিজের এক সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন নির্মাতা ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন। তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন একটি করে দেশের গান শেয়ার করবেন। সেই ধারাবাহিকতায় প্রথমদিন সাবিনা ইয়াসমিনের ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে’ গানটি শেয়ার করেছেন অভিনেত্রী। গানটি শেয়ার করে শাওন লিখেছেন, বিজয়ের মাস ডিসেম্বর শুরু হলো আজ। ঠিক করেছি ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন একটা করে দেশের গান আমার ফেসবুক পাতায় দিব।
তিনি আরও লেখেন, যাদের ভালো লাগবে শুনবেন। যাদের ৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসকে মানতে কষ্ট হয় তারা দয়া করে এড়িয়ে যাবেন, আমাকে অবন্ধু (আনফ্রেন্ড) করবেন। সবাইকে বাংলাদেশের বিজয়ের মাসের শুভেচ্ছা…।
বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের অবিস্মরণীয় গৌরবদীপ্ত চূড়ান্ত বিজয় আসে এ মাসের ১৬ ডিসেম্বর। স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বে আত্মপরিচয় লাভ করে বাঙালিরা। অর্জন করে নিজস্ব ভূখণ্ড আর সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত নিজস্ব জাতীয় পতাকা।
এই দিনটিকে সামনে রেখেই প্রতিদিন একটি করে দেশত্ববোধক গান নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ারের কথা জানালেন মেহের আফরোজ শাওন।
এদিকে, টলিপাড়ায় গায়িকা হিসেবে খুবই জনপ্রিয় লগ্নজিতা চক্রবর্তী। মাঝেমধ্যেই নিজের গান নিয়ে খবরের শিরোনাম হন তিনি। বিশেষ করে কলকাতার আরজি কর-কাণ্ডের সময় লগ্নজিতা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ট্রেন্ডিং ছিলেন।
এসব রেশ মিটতেই আরও একবার সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার মুখে পড়লেন এই গায়িকা। তবে এবার কারণটা ভিন্ন। সম্প্রতি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ফেসবুকে নিজের মতামত জানিয়েছিলেন লগ্নজিতা। এরপরই নেটিজেনদের কটাক্ষের শিকার হন তিনি। গায়িকা অবশ্য সেই সমালোচনার জবাবও দিয়েছেন।
শনিবার লগ্নজিতা তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘ভেবেছিলাম এই হিন্দু মুসলিমের ব্যাপারটা আমরা পেরিয়ে এসেছি, অনেক দিন, বছর, কাল আগেই। কোনওদিন ভাবিনি ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে, এই বিষয়টা নিয়ে একটা পোস্ট করতে হবে। এটা অতীত হয়ে গেছে, এমনটাই আমার ভাবনা ও চিন্তা ছিল।’
ফেসবুকে এই পোস্ট করতেই গায়িকাকে নিয়ে ট্রোল-সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। অনেকেই লেখেন লগ্নজিতা কিছুই জানেন না এই সম্পর্কে। আবার অনেকে লেখেন, গায়িকাকে তো বাংলাদেশের শ্রোতা ধরে রাখতে হবে।
এসব ট্রোল যদিও চুপ করে হজম করেননি গায়িকা। তিনিও পাল্টা জবাব দিয়েছেন। গায়িকা লেখেন, ‘অনেকে বলছেন, এই যে আমার হিন্দু মুসলিম নিয়ে ভাগ করতে ইচ্ছে করে না, করছে না। এটার কারণ নাকি সিপিএমের ৩৪ বছরের শাসন, আমি নাকি কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতে কী হয় কিছুই জানি না, আমি নাকি খুবই অশিক্ষিত, আমার আরও শিক্ষিত হওয়া উচিত ছিল ইত্যাদি ইত্যাদি।’
‘সে তো বুঝলাম। কিন্তু আমি তো হিন্দু-মুসলিম যে ভাই-ভাই, এটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, এনাদের থেকে শিখেছিলাম। তো রবীন্দ্রনাথ আর নজরুলও কি সিপিএম ছিলেন? জাস্ট জানতে চাইছি।’
এরপর গায়িকা একাধিক ট্রোল প্রসঙ্গে পাল্টা লেখেন, ‘শুনুন, থ্রেট শুনে আজকাল হুমকিরও বিরক্ত লাগে। যেকোনও জিনিস একঘেয়ে হয়ে গেলে যা হয় আরকি। আমি তো আপনার অফিস যাওয়া নিয়ে কিছু বলছি না। আমার গান গাওয়া নিয়ে আপনার এত সমস্যা কোথায়?’
এরপর মহাত্মা গান্ধীর মন্তব্যও শেয়ার করে লগ্নজিতা লেখেন, ‘তাহলে এখন থেকে আমি কংগ্রেস হয়ে গেলাম (যেভাবে আপনারা ট্রেন্ড ঠিক করে দিচ্ছেন আরকি)।
তবে রবিবার এই পোস্ট করার কিছুক্ষণের মধ্যেই গায়িকা তার পুরোনো সব পোস্ট ডিলিট করে দেন। এরপরই আরও একটি পোস্ট করেন লগ্নজিতা।
যেখানে তিনি লেখেন, আমার পরিবার (আমার ব্যক্তিগত জীবন) এবং আমার ব্যান্ড (আমার পেশাদার জীবন)-এর কাতর অনুরোধ, তাদের যেন আর অসম্মান না হয়, আমি আমার সমস্ত পোস্ট ডিলিট করতে বাধ্য হলাম। সমালোচনাকারীরা, আপনার জিতে গেলেন। আনন্দ করুন।