পথনাটকের মাধ্যমে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

সারাদেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীরা আয়োজন করেছে পথনাটক ‘ধর্ষণবিরোধী পরিবেশনা’। নাটকটির পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন রূদ্র সাওজাল।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ সংলগ্ন রাস্তায় এই পথনাটক প্রদর্শিত হয়। এতে কিছু শিক্ষার্থী মুখে কাপড় বেঁধে গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে নিশ্চুপ অবস্থান নেয়, আর কিছু শিক্ষার্থী নাটকে অভিনয় করে। প্ল্যাকার্ডগুলোতে লেখা ছিল— "মেয়ে ভালো না, স্লিভলেস পরে", "পর্দা করলে এই দশা হতো না", "ওর পোশাক ঠিক ছিল না", "এই মেয়ে ওড়না কোথায়?", "রাতের বেলা বাইরে কি কাজ?", "ফ্রি মিক্সিং করে", "শাড়ি পড়লে পেট দেখা যায়" ইত্যাদি, যা সমাজের প্রচলিত ভিকটিম ব্লেমিং-এর চিত্র তুলে ধরে।
২০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই নাটকে চিত্রায়িত হয়েছে এক নারীর প্রতি সংঘবদ্ধ সহিংসতা। কয়েকজন দুর্বৃত্ত মিলে এক তরুণীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে হত্যা করে। এরপর একে একে শিশুকন্যা, কিশোরী ও যুবতী নারীরা মঞ্চে আসে এবং তাদের প্রতি অন্যায়ের কারণ জানতে চায়। এতে দেখানো হয়—নারী যেই বয়সেরই হোক, যেই পোশাকই পরুক, সে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। সমাজের প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে নাটকের মাধ্যমে সবাইকে নারীর পোশাক ও আচরণ নিয়ে সমালোচনা না করে বরং তাদের প্রতি সহিংসতা বন্ধে সোচ্চার হতে আহ্বান জানানো হয়।
নাটকটির নির্দেশক রূদ্র সাওজাল বলেন, এই নাটকের উদ্দেশ্য একটাই— আমাদের মা, বোন ও মেয়েরা যেন নিরাপদ থাকে। বর্তমান সময়ে নারীরা যে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে চলাফেরা করছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। নীতি-নির্ধারকরা, যারা সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আছেন, তাদের এখনই এই বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। একুশ শতকে এসেও বাংলাদেশে নিয়মিতই ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, যা সমাজের বিকৃত মানসিকতার প্রতিফলন। আমরা চাই, আমাদের মা-বোনেরা সম্মানের সঙ্গে নিরাপদে বাঁচুক, স্বাধীনভাবে রাস্তায় চলতে পারুক।