বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি :

প্রকাশিত: ১১:১০, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪

বশেমুরবিপ্রবিতে অফিস না করেও বেতন নিচ্ছেন কর্মকর্তা

বশেমুরবিপ্রবিতে অফিস না করেও বেতন নিচ্ছেন কর্মকর্তা
সংগৃহীত

গোপালগঞ্জের, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) দীর্ঘ তিন মাস ধরে অফিস না করেও বেতন ভাতা নিচ্ছেন  উপ-রেজিস্ট্রার মোঃ নজরুল ইসলাম হীরা। 

জানা যায়, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তার নেতৃত্বে জুলাই ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করা হয়। মিছিল শেষে বক্তব্যে তিনি জুলাই ছাত্র আন্দোলনকারীদের জামায়াত-শিবির ট্যাগ দিয়ে পিঠের চামড়া তুলে নিতে চেয়েছিলেন। আরও অভিযোগ রয়েছে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের লিস্ট করে প্রশাসনের কাছে সরবরাহ করেন।

এছাড়াও,গত সেপ্টেম্বর মাসে গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া মোড়ে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী দিদার হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হয়ে তিনি আত্মগোপনে  রয়েছেন। মামলায় গ্রেফতার এড়াতে তিনি কিছুদিন  ছুটি নেন। তবে ছুটি শেষ হলে তিনি নিজেকে অসুস্থ দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ছুটির আবেদন করলেও ছুটি মঞ্জুর করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেজিস্ট্রার দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, "তিনি আওয়ামী লীগের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির এক মহা সিন্ডিকেট তৈরী করেছিলেন। তার সাথে প্রধানমন্ত্রীর পিএসের ভালো সম্পর্ক থাকায় তার প্রভাব দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়োগে হস্তক্ষেপ করতেন। ইতিপূর্বে তার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ পদক্ষেপ নিতে পারেনি।"

তিনি আরো বলেন, "বর্তমানে তিনি অফিস না করেও পাচ্ছেন বেতন। তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার মূল হলো তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে তার বিচার হওয়া প্রয়োজন।"

কর্মস্থলে অনুপস্থিতির বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মোঃ নজরুল ইসলাম হীরা বলেন, "ঘোনাপাড়া হত্যা কান্ডের সময় আমি বাসায় ছিলাম। যা আমার ফোনের লোকেশন দেখলে প্রমাণ পাবেন।"

তাহলে তিনি কেন অফিসে আসছেন না প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "আমি অসুস্থ আছি তার জন্য ছুটি নিয়েছি। এই জন্য আমি অফিসে আসছি না।"

প্রশাসন নতুন করে ছুটি না দেওয়ার পরেও কেন তিনি অফিস করছেন না প্রশ্নের উত্তরে বলেন, "আমি ছুটির আবেদন করেছি। প্রশাসন মিটিং করে সিদ্ধান্ত জানাবে বলেছন।"

তার অনুপস্থিতি ও অভিযোগের বিষয়ে রেজিস্ট্রার মোঃ এনামউজ্জামান বলেন, "আমি নতুন এসেছি, তাই বিষয় গুলো ভালো করে জানি না। রবিবার অফিসে যেয়ে জেনে বলতে পারবো।"

এই বিষয়ে সাবেক ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোঃ মুরাদ হোসেন বলেন, "তিনি ছুটি চেয়েছিলেন তবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটি মঞ্জুর হয়নি। এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি দ্রুত মিটিং করে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।"

তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো ছুটি দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে উপাচার্য অধ্যাপক হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, "হত্যা মামলার আসামি হিসেবে তার বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ কি হবে তা আমরা স্পষ্ট নয়। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনজীবীর সাথে যোগাযোগ করেছি। তিনি আইনি বিষয় গুলো কয়েকদিনের মধ্যে জানাবেন। এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নিব। বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে হলে কোনো পদে কেউ অনুপস্থিত থাকলে তা হয় না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে তিনি না আসলে সে পদে অন্য কাউকে আনতে হবে।"

জনপ্রিয়