পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গেলেন কর্মবিরতিতে
সর্বজনীন পেনশনব্যবস্থায় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করে ঘোষিত ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবিতে দেশের ৩৫ টি সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আজ সোমবার (১ জুলাই) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে গেছেন।
রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের মূল ফটকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া।
নিজামুল হক ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে আমরা বিবৃতি, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, মানববন্ধন, প্রতীকী কর্মবিরতি, স্মারকলিপি প্রদান এবং অবস্থান কর্মসূচি, কর্মবিরতি পালন করেছি। তবে সরকারের তরফ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আমরা এখনও আশা করি সরকার অনতিবিলম্বে এই যৌক্তিক দাবি মেনে নেবেন যাতে আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে পারি। অন্যথায় ১লা জুলাই থেকে সারা দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে।
ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম বলেন, এই প্রত্যয় স্কিম চরম অপরিপক্ব হাতের কাজ। এরমাধ্যমে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। প্রস্তাবিত ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাস্তবায়িত হলে বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, যারা আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় আসতে আগ্রহী, তাঁরাও এর ভুক্তভোগী হবেন। আমাদের আন্দোলন আগামী দিনের তরুণ সমাজের স্বার্থরক্ষার পক্ষে এবং উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের চক্রান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন।
সমিতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেবে না।
জিনাত হুদা আরও বলেন, আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর লোক। তবে যারা আমাদের বিরুদ্ধে অস্থিতিশীল অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চান। তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাব। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, শিক্ষকরা জাতির বিবেক, তাদের ডাকে সাড়া দেবেন।
এ দিকে প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি নয়টি কর্মসূচি দিয়েছে। এগুলো হলো অনলাইন, সান্ধ্যকালীন ক্লাস, শুক্র ও শনিবারের প্রফেশনাল কোর্সের ক্লাসসহ সব ধরনের ক্লাস বন্ধ থাকবে, সকল পরীক্ষা বর্জন-মিডটার্ম, ফাইনাল ও ভর্তি পরীক্ষাসহ কোন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না; বিভাগীয় চেয়ারম্যান বিভাগীয় অফিস, সেমিনার, কম্পিউটার ল্যাব ও গবেষণাগার বন্ধ রাখবেন; একাডেমিক কমিটি, সমন্বয় ও উন্নয়ন কমিটি, প্রশ্নপত্র সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে না।
সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন; নবীন বরণ অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করা যাবে না; কোনো সিলেকশন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে না; কোনো সেমিনার, কনফারেন্স ও ওয়ার্কশপের কর্মসূচি গ্রহণ করবেন না; হলের প্রাধ্যক্ষগণ প্রাধ্যক্ষ অফিস বন্ধ রাখবেন এবং প্রধান গ্রন্থাগারিক কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী বন্ধ রাখবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও কথা বলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোতাহার হোসেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মিজানুর রহমান প্রমুখ।