রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

নীলফামারী প্রতিনিধি :

প্রকাশিত: ১০:৪১, ৪ এপ্রিল ২০২৪

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় আসনবিহীন যাত্রীদের কোচ তৈরি

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় আসনবিহীন যাত্রীদের কোচ তৈরি
রেলওয়ে কোচ

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে নাড়ীর টানে বাড়ি ফিরবে লাখো মানুষ। ঈদ উপলক্ষ্যে নিয়মিত ট্রেনের সঙ্গে প্রয়োজন হবে বাড়তি দুই শতাধিক কোচের মধ্যে প্রস্তুত হওয়া ৮০টি ব্রডগেজ ও ৩০টি মিটারগেজ কোচ চলে গেছে পাকশী এবং লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের কাছে। এর মধ্যে আসনবিহীন যাত্রীদের জন্য দুটি কোচ বিশেষভাবে তৈরি করে ঈদের রেল বহরে সংযুক্ত করেছে কারখানাটি। যা সবার নজর কেড়েছে।

জানা গেছে, নীলফামারীর সৈয়দপুর দেশের প্রাচীন শহরগুলোর মধ্যে একটি। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এই শহর অনেক আগে থেকে প্রসিদ্ধ হলেও অনেকের কাছে রেলের শহর হিসেবে বেশি পরিচিত। ১৮৭০ সালে ১১০ একর জমির ওপর নির্মিত হয় দেশের প্রাচীন এবং বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত এ রেল কারখানার ২৬টি উপ-কারখানায় শ্রমিকরা কাজ করে থাকেন। প্রতিষ্ঠার পর এখানে নতুন কোচ তৈরি হতো। কিন্তু ১৯৯৩ সালে রেল সংকোচন নীতির আওতায় কোচ নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন রেলের ছোট বড় যন্ত্রাংশ থেকে শুরু করে ব্রডগেজ ও মিটারগেজ লাইনের বগি মেরামতসহ সব কাজ করা হয় এই কারখানায়। কারখানাটিতে স্বাভাবিক সময় প্রতিমাসে গড়ে ৩০ কোচটি মেরামত করা হয়। কিন্তু সারাদেশে ঈদের আগে ও পরের পাঁচদিন বিশেষ ট্রেন চলাচল এবং নিয়মিত ট্রেনেও অতিরিক্ত কোচ লাগানোর কারণে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় এবার ৫১ কর্মদিবসের মধ্যে ১১০টি যাত্রী কোচ মেরামতের সিদ্ধান্ত হয়। ঈদযাত্রায় ১৬টি বিশেষ ট্রেনে প্রতিদিন কমপক্ষে ২২ হাজার অতিরিক্ত মানুষ যাত্রা করতে পারবে।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান বলেন, আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমরা ১১০টি কোচ মেরামতের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যে মধ্যে সবকটি কোচ মেরামত শেষে রেলের ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের আন্তরিকতায় নষ্ট ও চলাচল অযোগ্য কোচগুলোকে সচল করা সম্ভব হয়েছে। ১১০টি কোচের মধ্যে আসনবিহীন যাত্রীদের জন্য দুটি কোচ বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। কোচের ভিতরে দুই পাশে ৮০ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। আর মাঝখানের প্রশস্ত জায়গায় ১৪১ জন আসনবিহীন যাত্রী দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে পারবেন। দাঁড়ানো যাত্রীদের ধরার জন্য ওপরে হাতল এবং স্থানে স্থানে খুঁটি আছে। এই কোচ দুইটি পার্বতীপুর-জয়দেবপুর রুটের ঈদ স্পেশাল ট্রেনের সঙ্গে যুক্ত হবে।

উল্লেখ্য, গাজীপুরের বিভিন্ন শিল্পকারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে জয়দেবপুর থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত তিনটি স্পেশাল ট্রেন চালু হয়েছে। আগামী ৭, ৮ ও ৯ এপ্রিল তিন দিনে তিনটি স্পেশাল ট্রেন রাত ১১টায় জয়দেবপুর ছেড়ে যাবে। ট্রেনটি জয়দেবপুর থেকে রওনা করে নাটোর, সান্তাহার, জয়পুরহাট, বিরামপুর, ফুলবাড়ী হয়ে সর্বশেষ স্টেশন পার্বতীপুর পৌঁছাবে। ট্রেনটিতে আসন সংখ্যা ৭১৬টি। এরমধ্যে ১ম শ্রেণির রয়েছে ২৪টি। বরাদ্দকৃত সব টিকেট কেবলমাত্র অনলাইনে পাওয়া যাবে। আসনবিহীন টিকেট ট্রেন ছাড়ার দুইঘণ্টা পূর্বে জয়দেবপুর স্টেশন থেকে দেওয়া হবে। ওই ট্রেনটি ঈদের পরদিন থেকে তিনদিন বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে গাজীপুর পৌঁছাবে।

আ/ম

সম্পর্কিত বিষয়:

জনপ্রিয়