রাজবাড়ীতে সাবেক এমপি কেরামতের ২ দিনের রিমান্ড

রাজবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় গুলিবর্ষণ ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর (৭৩) দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) কাজী কেরামত আলীকে আদালতে তোলা হলে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজবাড়ী সদর আমলি আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তামজিদ আহমেদ দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এছাড়া অপর একটি মামলায় তাকে শোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়।
রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর আজ দুইটি মামলায় শুনানি ছিল। জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় তাকে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে আদালত প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হয়। দুপুর ১১ টা ৫৫ মিনিটে তাকে এজলাসে তোলা হয়। এরপর শুনিনা শেষে দুপুর ১২ টা ১৫ মিনিটে তাকে এজলাস থেকে বের করে জিজ্ঞাসাবদের জন্য রাজবাড়ী ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার মামলায় গত ৬ এপ্রিল কাজী কেরামত আলীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরের দিন তাকে রাজবাড়ীতে নিয়ে আসা হয়। তাকে রাজবাড়ীর ঘটনায় শিক্ষার্থী রাজিব মোল্লার দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হয়। রাজিব মোল্লার দায়ের করা মামলায় কাজী কেরামত আলী এজাহার নামীয় ২নং আসামি। সে সময় আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর গত ১৭ এপ্রিল তার শুনানির তারিখ থাকলেও জজ কোর্টে নথি থাকায় শুনানির দিন পরিবর্তন হয়। আজ ২৮ এপ্রিল আবারও কাজী কেরামত আলীর শুনানির দিন ধার্য থাকলে তাকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় রাজিব মোল্লার দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিকাইল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এছাড়া রাজবাড়ী সদর থানায় জিসান খানের দায়ের করা মামলায় কাজী কেরামত আলীকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এনায়েত শিকদার। শুনানি শেষে আদালত তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
রাজবাড়ী কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আজকে সাবেক এমপি কাজী কেরামত আলীর দুইটি মামলায় শুনানি ছিল। রাজিব মোল্লার দায়ের করা মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এছাড়া জিসান খানের দায়ের করা মামলায় শোন অ্যারেস্ট শুনানি ছিল, বিজ্ঞ আদালত শুনানিতে মঞ্জুর করেছেন।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগে গত ৩০ আগস্ট কাজী কেরামত আলীসহ ১৭০ জনের নাম উল্লেখ করে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা দায়ের করেন রাজবাড়ী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রাজিব মোল্লা। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় গত ৬ এপ্রিল দিবাগত রাতে কাজী কেরামত আলীকে রাজধানীর মহাখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
পরদিন ৭ এপ্রিল বেলা পৌনে ১২টার দিকে তাকে রাজবাড়ী সদর আমলী আদালতে তোলা হলে তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তামজিদ আহমেদ তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এরপর থেকে তিনি এ মামলায় জেলা কারাগারে আছেন। আজ একই অপরাধের আরও একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখান হলো। এছাড়া ঢাকার গুলশান থানার একটি হত্যা মামলায় কাজী কেরামত আলীর এজাহার নামীয় ১২নং আসামি।