টুঙ্গিপাড়া থানা রাতভর কেন ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ সন্দেহে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা দিতে সাঁজোয়া যান নিয়ে সারা রাত টুঙ্গিপাড়া থানা ঘিরে রেখেছে সেনাবাহিনী।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টা থেকে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সাঁজোয়া যান নিয়ে টুঙ্গিপাড়া থানার সামনে অবস্থান করেছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে এক ব্যক্তিতে আটকের জেরে এ ঘটনা ঘটে।
টুঙ্গিপাড়া থানা-পুলিশ জানায়, হামলাকারী সকলেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থক। হামলায় টুঙ্গিপাড়া থানার ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় খান সাহেব শেখ মোশাররফ হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে স্থানীয় আ. লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের ডাকা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ করছেন, এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এ সময় লিফলেট বিতরণ বন্ধ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশের কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় সাফায়েত গাজীকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ।
এ সময় পুলিশের গাড়ি আটকে ভাঙচুর করাসহ একজন পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে তাদের ওপর হামলা চালান স্থানীয়রা। পরে থানার অন্য পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাঁরাও তোপের মুখে পরেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যকে ছাড়িয়ে নেন। বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনার পর থেকেই নিরাপত্তা দিতে বেশ কয়েকটি সাঁজোয়া যান নিয়ে টুঙ্গিপাড়া থানার সামনে সারা রাত অবস্থান করছে সেনাবাহিনী। এ ছাড়াও টুঙ্গিপাড়া থানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোরশেদ আলম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের থানাসহ সকল পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তাজনিত কারণে সাঁজোয়া যান নিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা থানার চারপাশে অবস্থান করেছে। হামলায় ৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মঈনুল হক বলেন, ‘পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও একজন পুলিশ সদস্যকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে উত্তেজিত জনতাকে বুঝিয়ে শান্ত করে সেই পুলিশ সদস্যকে ছাড়িয়ে ওসির কাছে পৌঁছে দেই। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’