শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে বশেমুরবিপ্রবিতে বিক্ষোভ মিছিল
সারাদেশের ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে এবং সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা সংষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও জনসমাবেশ করেছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর সাড়ে তিন টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে, মেইনগেটে এসে দুই ঘন্টা ব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা,' কোটা না মেধা, মেধা মেধা' 'দালালি না রাজ পথ, রাজ পথ রাজ পথ', 'পুলিশ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না', 'হামলা করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না' ইত্যাদি স্লোগান দেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা, ক্ষেত্রে সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য কোটাকে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নূন্যতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করে কোটা পদ্ধতিকে সংস্কার করার দাবি জানান। একই সাথে সারাদেশে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় এবং সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।
এই বিষয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বশেমুরবিপ্রবি শাখার সমন্বয়ক জসিম উদ্দিন বলেন," আপনারা জানেন যে, গতকাল দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক হামলা চালানো হয়েছে এবং আমাদের ভাইদেরকে রক্তাক্ত করা হয়েছে। আমার বোনদেরকে রাস্তায় ফেলে পেটানো হয়েছে। আমরা সেই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্র থেকে আমাদের যে নির্দেশনা ছিল সেই অনুসারে ক্যাম্পাসে আমরা বিক্ষোভ মিছিল করেছি। আমাদের ভাইদের উপর যদি কোনও প্রকার আবার আঘাত হানা হয়, আমরা তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে প্রস্তুত আছি। আমরা রাজপথে আছি থাকব রাজপথে আমরা লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাব, ছাত্রসমাজ কখনও হার মানে না ছাত্র সমাজ তাদের যৌক্তিক যে কোনও দাবিতে সব সময় রক্ত দিয়েছেন, রক্ত দিয়ে যাবে।"
তিনি আরো বলেন, "আপনারা জানেন আমরা কিন্তু এক দফা দাবিতে আন্দোলন করছি। আমাদের দাবি কিন্তু একটাই এক দফায় সেই এক দফা দাবিগুলো পূরণ করে নেওয়া হয় তাহলে আমরা ঘরে ফিরব। তার আগে আমরা কখনও ঘরে ফিরব না। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট যে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সকল গ্রেডে সংস্কার করতে হবে এটাই আমাদের একমাত্র দাবি।"
আন্দোলনরত অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন,"আমরা আমাদের কোটার যৌক্তিক সংস্কার চাই। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে কোটা সংষ্কার চাওয়া আমাদের মৌলিক অধিকার। আমরা জানি শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড কিন্তু বর্তমানে কোটাই জাতির মেরুদণ্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব সংসদে আইন পাশ করে কোটার যৌক্তিক সংস্কার করা হোক"।
উল্লেখ্য,সব ধরনের সরকারি চাকরিতে কোটা সংষ্কারের দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলা অবস্থায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে অনেক শিক্ষার্থী গুরুত্বর আহত হন।