কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসিয়ে বৈসাবি উৎসব শুরু

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হলো পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় উৎসব বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা। এই উৎসবটি তিনদিন ব্যাপী চলবে।
শুক্রবার ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে তারা ফুলবিজু উপলক্ষে শহরের রাজবনবিহার ঘাট, গর্জনতলী মধ্যদ্বীপ, কেরাণী পাহাড়সহ বিভিন্ন স্থানে বৈসু, বিষু, বিহু, চাংক্রান-২০২৪ উদযাপন কমিটি ও ব্যক্তিগত উদ্যেগে পানিতে ফুল ভাসানো হয়।
ফুল বিজু উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে নৃ-গোষ্ঠীর নানা বয়সী তরুণ-তরুণী থেকে বৃদ্ধ সকলে বন থেকে ফুল সংগ্রহ করে পুরানো বছরের সকল গ্লানি কাটিয়ে নতুন বছরের শুভ কামনায় এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে কাপ্তাই হ্রদের জলে ফুল ভাসিয়ে দেন। পরে বাড়ি ফিরে ফুল ও নিমপাতা দিয়ে ঘর সাজানো হয় এবং বয়োবৃদ্ধদের পা ধুয়ে দিয়ে নতুন কাপড় উপহার দেওয়া হয়।
রাঙামাটির স্থানীয় সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার গণমাধ্যমকে বলেন, ফুল ভাসানোর মাধ্যমে সম্প্রীতি ও কল্যাণের বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়। সামনের বছর যাতে সকলের ভালো কাটে, সুস্থভাবে কাটে এই প্রার্থনায় ফুল ভাসানো হয়।
পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো দিনের বেদনা ভুলে নতুন দিনের প্রত্যয়ের কথা জানায় ফুল ভাসাতে আসা পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা। ফুল ভাসিয়ে জিনিয়া চাকমা বলেন, ফুল বিজুর দিনে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে ফুল নিবেদন আমাদের ঐতিহ্য। পাশাপাশি আজকে থেকেই বর্ষবরণের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ১২টি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাংলা বর্ষকে বিদায় জানানোর এ অনুষ্ঠান তাদের প্রধান সামাজিক উৎসব হিসেবে বিবেচিত। এই উৎসব চাকমা জনগোষ্ঠী বিজু নামে, ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী মানুষ সাংগ্রাই, মারমা জনগোষ্ঠী মানুষ বৈসুক, তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠী বিষু, কোনো কোনো জনগোষ্ঠী বিহু নামে পালন করে থাকে। বৈসুকের ‘বৈ’ সাংগ্রাইয়ের ‘সা’ ও বিজু, বিষু ও বিহুর ‘বি’ নিয়ে উৎসবটিকে সংক্ষেপে ‘বৈসাবি’ নামে পালন করা হয়।
আ/ম