বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

ইমরানুল আজিম চৌধুরী

প্রকাশিত: ২৩:১১, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

প্রযুক্তির ব্যর্থতা, তদারকির ঘাটতি—মহাসড়কে আবারও অপরাধের জোয়ার

প্রযুক্তির ব্যর্থতা, তদারকির ঘাটতি—মহাসড়কে আবারও অপরাধের জোয়ার
ছিনতাইয়ের প্রতীকী ছবি

প্রযুক্তিনির্ভর নিরাপত্তা ব্যবস্থার অকার্যকারিতা, হাইওয়ে পুলিশের তদারকির ঘাটতি ও অপরাধীদের নতুন কৌশল—সব মিলিয়ে মহাসড়ক হয়ে উঠছে ঝুঁকিপূর্ণ।

 

বেপরোয়া মহাসড়ক: নজরদারিহীন অন্ধকার

ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-মাওয়া, ঢাকা-টাঙ্গাইলসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে স্থাপিত অধিকাংশ সিসিটিভি ক্যামেরা এখন আর কাজ করছে না। কোনোটি নষ্ট, আবার কোনোটি চুরি হয়ে গেছে। এতে করে মহাসড়কে বেড়েছে ডাকাতি, ছিনতাই ও নানা অপরাধ। সবচেয়ে আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছেন রাতের ট্রাকচালক ও যাত্রীবাহী বাসের যাত্রীরা।

 

 

১৫২ কোটি টাকার প্রকল্প, কিন্তু ফলাফল শূন্য?

২০২১ সালের একটি প্রকল্পে প্রায় ১৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪২৭টি সিসিটিভি বসানো হয়েছিল ৪৯০টি স্থানে। উদ্দেশ্য ছিল যানবাহনের গতিবিধি ও অপরাধ নজরদারিতে আনা। কিন্তু তিন বছরের ব্যবধানে অনেক ক্যামেরা চুরি হয়ে গেছে, বাকিগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।

 

 

ডাকাতদের দাপট

সিসিটিভি না থাকায় ডাকাতরা নির্ভয়ে মহাসড়কে গাড়ি থামিয়ে লুটপাট চালাচ্ছে। চালক ও যাত্রীরা জানাচ্ছেন, নির্জন এলাকায় রাতে চলাচল এখন আতঙ্কের। পুলিশ বলছে, ক্যামেরা না থাকায় অপরাধ শনাক্তে দেরি হচ্ছে, মামলার অগ্রগতি হচ্ছে না।

 

 

চুরি হওয়া প্রযুক্তি, ফাঁকি দিচ্ছে নিরাপত্তা

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্যামেরা চুরির ঘটনা প্রযুক্তির নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় ফাঁকফোকর তৈরি করেছে। অনেকে আবার বিদ্যুৎ ও সংযোগ না থাকাকে দায়ী করছেন। কোনো কোনো চক্র আবার প্রযুক্তি জ্যামিং করে অপরাধ সংঘটিত করছে বলে অভিযোগ আছে।

 

 

সরকারের প্রতিশ্রুতি, বাস্তবতা কতটা? 

হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, নতুন করে আরও ক্যামেরা বসানো ও পুরনোগুলো মেরামতের পরিকল্পনা আছে। তবে বাস্তবায়ন এখনো শুরু হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তির পাশাপাশি প্রয়োজন রক্ষণাবেক্ষণ, মনিটরিং এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতা।

 

 

জনগণের প্রত্যাশা

চালক, মালিক ও সাধারণ যাত্রীরা চান, নিরাপত্তা ব্যবস্থা শুধু কাগজে নয়, বাস্তবে যেন কার্যকর হয়। তারা বলছেন, ক্যামেরা বসানো হয়েছে—এটা জানলে চক্রগুলো আরও কৌশলী হয়, তাই নজরদারির বাস্তব রূপটাই সবচেয়ে জরুরি।

 

 

উপসংহার

মহাসড়কে প্রযুক্তিনির্ভর নিরাপত্তা ব্যবস্থার চূড়ান্ত ব্যর্থতা এখন ডাকাতদের সুযোগ করে দিচ্ছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে নজরদারি জোরদার করা, নইলে বড় ধরনের নিরাপত্তা বিপর্যয় অনিবার্য।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়