দূর্নীতিবাজ লিয়াকতের নাটকীয় উত্থান, শুরুই যার জালিয়াতি দিয়ে!
মোংলা কাস্টমস এজেন্ট এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক শেখ লিয়াকত হোসেন লিটন। যার সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়া নিয়েই রয়েছে বিতর্ক। অভিযোগ উঠেছে তিনি সার্টিফিকেট জালিয়াতির মাধ্যমে সংগঠনটির প্রাথমিক সদস্য পদ লাভ করেন। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তা নিয়ে গড়েছেন অবৈধ অর্থের পাহাড় আর বাগিয়ে নিয়েছেন স্বনামধন্য এ ব্যবসায়ী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পদটি। এহেন কোনো দুর্নীতি নেই যা তিনি করেননি। স্বর্ণ চোরাচালান, শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে পণ্য খালাস, ভারতে জাল মুদ্রার ব্যবসা সবই করছেন কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসূত্রে।
এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ মোংলা কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশনের সদস্য মহিউদ্দিন আহমদের দেওয়া একটি উকিল নোটিশে। সেখানে উঠে এসেছে কিভাবে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক দীর্ঘদিন কাস্টমসের অসাধু কর্মকর্তার যোগসূত্রে দুর্নীতি করে হয়েছেন অঢেল সম্পদের মালিক। উকিল নোটিশটি দেওয়া হয়েছে মোংলা সিএন্ডএফ এর সভাপতি মো. সুলতান হোসেন খান এর নিকট।
এ বিষয়ে সুলতান হোসেন খান বলেন, আমরা ইতিমধ্যে উকিল নোটিশ গ্রহণ করেছি। প্রাপ্ত অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। ঘটনার সত্যতা পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত ও তার ভাই শেখ জুয়েলের যোগসাজশে মটোর পার্টস আমদানীর ঘোষণা দিয়ে বাস/ট্রাকের ইঞ্জিনের মধ্যে স্বর্ণ আনতেন।
অভিযোগ আছে, সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত এর ভাই এর সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়াও অবৈধ। সংগঠনের সাধারণ সদস্য হতে হলে নূন্যতম স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে। কিন্তু দুই ভাই এর সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতাই এসএসসি!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য জানান, মোংলা বন্দরে সার খালাশ এর পক্ষে ৩৫ জন সিএন্ডএফ এজেন্ট নিয়োগ প্রাপ্ত হয়। নিয়োগপ্রাপ্ত ৩৫ জন সিএন্ডএফ এর কাছ থেকে ৬৮ লাখ টাকা বি.সি.আই.সি কর্তৃপক্ষকে ঘুষ দেবার জন্য সংগ্রহ করেন লিটন। সে অর্থ অত্র এসোসিয়েশনের হিসাবে জমা না দিয়ে পুরো টাকাই লোপাট করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শেখ লিয়াকত হোসেন লিটন এর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে কয়েকটি ফৌজদারী মামলা হয়েছে। এবং তার বিরুদ্ধে থাকা সকল অভিযোগ বিবেচনা করলে সাধারণ সদস্য পদও বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বিষয়ে শেখ লিয়াকত হোসেন লিটন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়েই পুরো বিষয়টি এড়িয়ে যান। পরে একাধিকবার চেষ্টা করেও তার সাথে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
দ্বিতীয় পর্ব- 'মোংলা কাস্টমসের সিএন্ডএফ সদস্যদের যত সিন্ডিকেট!'